সরকার এক মার্কেট পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে পাটের ব্যবহার বৃদ্ধি করছে। বস্ত্র, পাট, বাণিজ্য এবং পরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন জানিয়েছেন, প্রায় শত কোটি টাকার একটি বিশেষ ফান্ডের মাধ্যমে জেডিপিসি (বাংলাদেশ জুট ক্যাপিটালস লিমিটেড) এর মাধ্যমে প্রায় ১০০৬ উদ্যোক্তার মধ্য দিয়ে পাটের বাজারে একটি সাংস্কৃতিক পরিবর্তন আনার চেষ্টা চলছে। এই উদ্যোগের মূল উদ্দেশ্য হলো পাটের ব্যবহার বহুমুখী করে তুলা এবং তার মাধ্যমে একটি টেকসই, পরিবেশ বান্ধব ও আধুনিক চিত্র গড়ে তোলা। তিনি আরও বলেছেন, অতীতে যেখানে পাটের ব্যাগ বা টোটকার ব্যবহার দেখা যেত না, সেখানে এখন গবেষণার মাধ্যমে এর পরিধি ও মান বৃদ্ধি করতে হবে। পাটের রেপিং বা মোড়ক তৈরির উপকরণ হিসেবে বিশ্ববাজারে পাটের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
বুধবার ঢাকা রাজধানীতে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের অডিটোরিয়ামে ‘টেকসই উন্নয়নে পাটের ভূমিকা’ শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন শেখ বশিরউদ্দীন। এই অনুষ্ঠানে তিনি শিক্ষার্থীদের ফিচার ‘ফিউচার ক্যাপ্টেন’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, আমাদের সচেতনতা ও সাংস্কৃতিক পরিবর্তন দরকার, যা বাধ্যতামূলক নয়, বরং স্বাভাবিক পরিবর্তনের মাধ্যমে আসবে। পাট প্রকল্পে ইনোভেশন ও খরচ কমানোর মাধ্যমে এর বাণিজ্যিক সফলতা সম্ভব, যা প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবেও কাজ করবে। এজন্য নীতি, পরিকল্পনা ও প্রচেষ্টার সমন্বিত উদ্যোগ জরুরি। উৎপাদনশীলতা বাড়ানো মানে শ্রমিকের সংখ্যা ও ক্ষমতা বৃদ্ধিও। প্রতিষ্ঠানগুলোকে শ্রেষ্ঠ করতে হলে আপনাদের সবার সংস্কৃতি ও মনোভাব উন্নত করতে হবে।
প্রসঙ্গত, অনুষ্ঠানে টেক্সটাইল ইনস্টিটিউটের উপাচার্য প্রফেসর ড. ইঞ্জি. মো. জুলহাস উদ্দিন এর উদ্যোগে শেখ বশিরউদ্দীনকে সম্মাননা স্মারক প্রদান করা হয়। মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইয়ার্ন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. হোসনে আরা বেগম, যিনি দেশের অর্থনীতিকে টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব করে তুলতে পাটের চাষ, রপ্তানি ও ভবিষ্যত সম্ভাবনা বিষয়ে বিশদ আলোচনা করেন। তিনি ডাকা হয়েছেন আগামী বাণিজ্য মেলায় একমাত্র পাটব্যাগের প্রচলন করার দাবি নিয়ে। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটের, আইইবির, আইটিইটি ও অন্যান্য শিক্ষাবোর্ডের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। এই উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশের পাট শিল্পের ভবিষ্যত আলোকিত হবে বলেই প্রত্যাশা।