শিশুদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বেসরকারি খাতের অগ্রগতি ও অংশগ্রহণ বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়েছে ইউনিসেফ। গত বৃহস্পতিবার রাজধানীর গুলশানে আইসিসি বাংলাদেশের কার্যালয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ইউনিসেফের প্রাইভেট ফান্ডরেইজিং ও পার্টনারশিপস বিভাগের পরিচালক কার্লা হাদ্দাদ মারদিনি এ ব্যাপারে আহ্বান জানান।
এই সংলাপে ইন্টারন্যাশনাল চেম্বার অব কমার্স (আইসিসি) বাংলাদেশ ও ইউনিসেফের মধ্যে শিশু অধিকার, টেকসই উন্নয়ন ও সামাজিক কল্যাণে বেসরকারি খাতের গুরুত্বপূর্ণ অবদান নিয়ে নানা দিকনির্দেশনামূলক আলোচনা হয়। আইসিসি বাংলাদেশের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
আইসিসি বাংলাদেশের সভাপতি মাহবুবুর রহমান বলেন, সমাজে দায়বদ্ধতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনৈতিক উন্নতিতে আইসিসি বাংলাদেশ দীর্ঘদিন থেকে কাজ করছে। প্যারিসভিত্তিক এই সংস্থার বাংলাদেশ শাখা হিসেবে তারা দায়িত্বশীল ব্যবসা ও নৈতিক কর্পোরেট চর্চার প্রচার চালিয়ে আসছে, যা দেশের উন্নয়ন ও টেকসই লক্ষ্য অর্জনে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে।
তিনি আরও বলেন, ইউনিসেফের বিভিন্ন উদ্যোগে আইসিসি বাংলাদেশ নিয়মিত সহায়তা দিয়ে আসছে। ২০২২ সালে সিলেট ও সুনামগঞ্জে বন্যার সময় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য ১৫ লাখ টাকার অনুদান দিয়েছে সংস্থাটি। এছাড়া, ২০২৪ সালের এপ্রিল মাসে গাজা সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত শিশুদের জন্য চিকিৎসা, খাদ্য ও মানবিক সহায়তা হিসেবে তিন কোটি টাকা অনুদান প্রদান করে ইউনিসেফ।
এদিকে, ইউনিসেফের পরিচালক কার্লা হাদ্দাদ মারদিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রতিটি শিশুর শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ, উদ্ভাবন এবং সহযোগিতা অবিলম্বে বর্ধিত করার প্রয়োজন। ব্যবসায়ী সমাজকে একত্রিত করে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য তারা আইসিসি বাংলাদেশের প্রতি কৃতজ্ঞ।
অলোচনায় উপস্থিত ছিলেন আইসিসি বাংলাদেশের সহ-সভাপতি এ. কে. আজাদ, এমসিসিআই সভাপতি কামরান টি. রহমান, ডিসিসিআই সভাপতি তাসকীন আহমেদ, বিটিএমএ সভাপতি শওকত আজিজ রাসেল, বিজিএমইএ সহ-সভাপতি ব্যারিস্টার বিদ্যা অমৃত খান, প্লামি ফ্যাশনসের এমডি ফজলুল হক, উত্তরা গ্রুপের চেয়ারম্যান মতিউর রহমান, সায়হাম কটন মিলসের এমডি প্রকৌশলী সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, আইসিসি বাংলাদেশের সেক্রেটারি জেনারেল আতাউর রহমান ও অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
প্রতিনিধিদল উল্লেখ করে, বেসরকারি খাত অর্থনৈতিক সাহায্যের সঙ্গে সঙ্গে শিশু অধিকার, লিঙ্গ সমতা, তরুণদের ক্ষমতায়নে প্রভাব ও নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে সক্ষম।
সভা শেষে আইসিসি বাংলাদেশ ও ইউনিসেফ ভবিষ্যতের অংশীদারিত্ব ধরে রাখতে একটি যৌথ রোডম্যাপ প্রণয়নের সিদ্ধান্ত নেয়। এই রোডম্যাপের মূল লক্ষ্য হবে কর্পোরেট অংশগ্রহণ বাড়ানো, নীতিগত বিষয়গুলোর আলোচনা জোরদার করা এবং শিশু ও তরুণদের কল্যাণে সম্প্রদায়ভিত্তিক কার্যক্রম বাস্তবায়ন। এই পরিকল্পনা ২০২৩ সালের ৩১ অক্টোবর স্বাক্ষরিত আইসিসি বাংলাদেশ–ইউনিসেফ সমঝোতা স্মারকের আওতায় বাস্তবায়িত হবে।