বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেছেন, কিছু অতিরিক্ত সরকারের উপদেষ্টা একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের পক্ষে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তিনি এই অভিযোগ নিয়মিতভাবে তার কাছেও রেকর্ড রয়েছে এবং সতর্ক করে দিয়েছেন যে, এ ধরনের শক্তিশালী ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে নির্বাচনী পরিবেশকে অস্থিতিশীল করে তুলতে চায় কিছু পক্ষ।
তিনি গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মৎস্য ভবনের সামনে জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা আয়োজিত মানববন্ধনে এই উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তাহের বলেন, একটি নিরপেক্ষ এবং সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে হলে প্রশাসন ও উপদেষ্টা মহলের দলীয় প্রভাব মুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। তবে, বর্তমান অবস্থায় দেখা যাচ্ছে, কিছু উপদেষ্টা একটি পক্ষের পক্ষে কাজ করে কোনঠাসা করে ফেলছেন জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের স্বাধীকাররক্ষাকারী ব্যবস্থা। তার কাছে এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত কারা, তাদের তালিকা ও রেকর্ড রয়েছে।
তাহের আরও অভিযোগ করেন, বর্তমানে ডিসি, এসপি, এবং ইউএনও নিয়োগের ক্ষেত্রে পক্ষপাতিত্ব করা হচ্ছে। এক গোষ্ঠীকে সুবিধা দিতে নিয়োগের এই প্রক্রিয়া পরিচালনা করা হচ্ছে বলেও দাবি করেন তিনি। এসব কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করছে সরকারের কিছু উপদেষ্টা, যারা মূলত নিরপেক্ষ থাকার প্রতিশ্রুতি দিলেও, প্রকৃতপক্ষে তারা একটি দলের পক্ষে ভূমিকা রাখছেন।
তিনি বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতন্ত্রসার রাখার জন্য এই ষড়যন্ত্র দ্রুত বন্ধ করতে হবে। প্রশাসনের ভেতরে যদি দলীয় প্রভাব ও গোপন মদদ থাকে, তবে নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাবে। যারা এই নির্বাচনকে নাটকীয় করে তুলতে চায়, জনগণ তা মেনে নেবে না।
তাহের আবারও গণভোটের দাবি জানান, তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে একটি গণভোটের আয়োজন করা উচিত। এতে দেশের জনগণের ইচ্ছা ও বাস্তবতা স্পষ্ট হবে। নিজস্ব ভিশন অনুযায়ী স্বচ্ছতা থাকলে ২১ দিনের মধ্যে এই গণভোট সম্পন্ন সম্ভব।
তিনি আরও বলেন, মুখে গণতন্ত্র ও সংস্কারের কথা বললেও, ঐক্য ও একমতের ক্ষেত্রে কিছু ব্যক্তির অনুপস্থিতি দেখা যাচ্ছে। তিনি জুলাই মাসের সনদ বাস্তবায়নের জন্য রাজপথে থাকবেন এবং প্রয়োজনে আরও বৃহৎ কর্মসূচিতে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেন।
অন্যদিকে, জামায়াতের রাজনীতি নিয়ে নেতিবাচক প্রচারণার জবাব দিয়ে তাহের বলেন, জামায়াত দখলবাজি বা চাঁদাবাজি করে না। তারা জনগণের জন্য রাজনীতি করে। ক্ষমতায় গেলে কৃষকদের ঋণ আদায়ের ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং সুষ্ঠু ও ন্যায়সংগত বিচার ও আইন প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করবে।
তিনি সরকারের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, জনগণের দাবি মানতে হবে, গণভোট কার্যকর করতে হবে এবং গণমাধ্যমের পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। এছাড়াও, খুন-গুমের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের আওতায় আনার জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানান।