সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন বেতন নির্ধারণের জন্য গঠিত জাতীয় বেতন কমিশন সম্প্রতি প্রস্তাবটি চূড়ান্ত করেছে। এই প্রস্তাবে গত দশ বছরের মূল্যস্ফীতির প্রভাব বিবেচনা করে বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করা হয়েছে, যা বেশ উল্লেখযোগ্য—প্রায় ৯০ থেকে ৯৭ শতাংশ পর্যন্ত। এই খসড়া প্রস্তাব সোমবার কর্মকর্তাদের কাছে পৌঁছেছে, যা এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।
নতুন বেতন কাঠামো অনুযায়ী, গ্রেড-১ এর কর্মচারীদের মূল বেতন হবে ১ লাখ ৫০ হাজার ৫৯৪ টাকা, যা প্রাথমিকভাবে অবশ্যই বাস্তবায়িত হবে। পাশাপাশি অন্যান্য গ্রেডের জন্যও সংশ্লিষ্ট বেতনের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়েছে, যেমন গ্রেড-২ এর জন্য ১ লাখ ২৭ হাজার ৪২৬ টাকা, গ্রেড-৩ এর জন্য ১ লাখ ৯ হাজার ৮৪ টাকা, গ্রেড-৪ এর জন্য ৯৬ হাজার ৫৩৪ টাকা, গ্রেড-৫ এর জন্য ৮৩ হাজার ২০ টাকা, এবং এভাবে ক্রমাগত গ্রেড অনুসারে বেতন নির্ধারণ করা হয়েছে। বিভিন্ন গ্রেডের জন্য এই নতুন সুবিধাগুলি কর্মচারীদের জীবনে বড় পরিবর্তন আনবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আগে অর্থনীতির চাপের কারণে বর্তমান সরকারই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি করার, যাতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এজন্য গত ২৭ জুলাই সরকার গঠন করে জাতীয় বেতন কমিশন। ভবিষ্যতে এই কমিশন চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দিতে চাইবে ডিসেম্বরের মধ্যেই, যার আগে তারা সংশ্লিষ্ট সকল তথ্য ও হিসাবনামা প্রস্তুত করবে।
অর্থমন্ত্রী ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, এই সুপারিশ বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় অতিরিক্ত অর্থের বরাদ্দ আগামী বাজেটে থাকবে। ডিসেম্বরে চলমান বাজেট সংশোধনের মাধ্যমে এ সুবিধাগুলো কার্যকরে কাজ শুরু হবে এবং সম্ভাব্য সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন সম্পূর্ণ হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।
অন্যদিকে, সরকারি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধীনস্থ দপ্তরগুলোর নিয়োগ, পদোন্নতি ও অন্যান্য কার্যক্রমে অনেক কর্মকর্তার সম্মানী ও ভাতা হালনাগাদ করা হয়েছে। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এই নতুন নির্দেশনা এসেছে। এর মধ্যে প্রশ্নপত্র প্রণয়নের সম্মানী ১ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৬ হাজার টাকা, বিভাগীয় নির্বাচনের সদস্যদের জন্য একইভাবে বাড়ানো, মৌখিক ও ব্যবহারিক পরীক্ষার সদস্যদের জন্য সম্মানী বৃদ্ধি, এবং অন্য পরীক্ষা-প্রক্রিয়ার বিভিন্ন খরচের জন্য নির্ধারিত ভাতার মান বাড়ানো হয়েছে।
উপযুক্ত কর্মচারীদের জন্য পর্যায়ক্রমে ভাতা বৃদ্ধি, কেন্দ্রপ্রধান ও পরিদর্শকদের জন্য সম্মানী নির্ধারণ, এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচের সর্বোচ্চ সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সিদ্ধান্তগুলি সরকারি কর্মপ্রণালীকে আরও গতিশীল করবে এবং কর্মরত কর্মকর্তাদের উৎসাহ ও মনোভাব উন্নত করবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে।