ঢাকা | বৃহস্পতিবার | ৪ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১২ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

আজ বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

আজ ১ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) এর ৪৭তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী। এই বিশেষ দিনটি উপলক্ষে বিএনপি বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা ও অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা। ১৯৭৮ সালের এই দিনে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান দলটি গঠন করেন, তিনি ছিলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।

জিয়াউর রহমান ১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের সময় শহীদ হন। এর পরে ১৯৮৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তার সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়া দলটির নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। তিনি বর্তমানে দলের চেয়ারপারসন। স্বাধীনতার পর থেকে বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জের মধ্য দিয়ে খালেদা জিয়া দলের নেতৃত্বে রয়েছেন। ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে তারেক রহমান, খালেদা জিয়ার পক্ষে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে তিনি যুক্তরাজ্যে অবস্থান করে দলের কার্যক্রম পরিচালনা করছেন।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে আজ সকাল ৬টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের অন্যান্য দলীয় অফিসে পতাকা উড়ানো হবে। সকাল ১১টায় সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ সহ তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন হবে। এতে অংশ নেবেন দলটির মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্যরা, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের প্রতিনিধি দলের নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি দেশের জেলা ও মহানগরীতে আলোচনা সভা ও র‌্যালির আয়োজন থাকছে।

গতকাল বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান তার ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে এক বাণীতে এ দিবসের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, জনগণের অধিকার, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় বিএনপি এখনো সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭৮ সালে জাতির জনক শেখ মুজিবের নেতৃত্বে স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান, যা আজকের বাংলাদেশের জন্য প্রেরণার এক শক্তিশালী উৎস।

তারেক রহমান বলেন, স্বাধীনতার পরপরই একদলীয় বাকশালী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা হয়, যা গণতন্ত্রের জন্য মারাত্মক ক্ষতি ডেকে আনে। সে সময় অস্বস্তি, সহিংসতা এবং রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ড নিত্যদিনের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়। ফলে দেশের মানুষ দুর্ভিক্ষে অভ্যন্তরীণ দুর্যোগে পড়েন। বিএনপি এই অন্ধকার সময়ে শহীদ জিয়াউর রহমানের নেতৃত্বে পুনরায় বহুদলীয় গণতন্ত্র ও নাগরিক স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনেন।

তিনি আরও বলেন, আজকের দিনে বিএনপি দেশের স্বাধীকার ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের অবদান স্মরণ করে তিনি বলেন, সকল চক্রান্ত উপেক্ষা করে দেশের স্বাধীকার রক্ষায় নেতাকর্মীরা নিবেদित। ১৯৮০’র দশকে সুদীর্ঘ সময়ের সামরিক স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নেতা বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি দৃঢ় অবস্থানে ছিল। ১৯৯১ সালে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে গণতন্ত্র পুনর্বাসন করেন।

তাকে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপি অনেকবার দেশের গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার জন্য অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। এই প্রতিষ্ঠানের মূলনীতির মধ্যে রয়েছে দেশের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করা, পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ও নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, শিল্প, ব্যবসা, ব্যাংক ঋণ, বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্স বৃদ্ধি। ফলে দেশের অর্থনীতি শক্তিশালী হচ্ছে, দেশের মানুষ স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ফিরে পাচ্ছে।

তারেক রহমান বলেন, জনগণের আস্থা অটুট রাখতে বিএনপি দেশের সেবায় নিজের সর্বোচ্চ উৎসর্গ করে যাবে। যারা দলের জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে তিনি বলেন, সত্যিকার অর্থে একটি স্বাধীন, সুষ্ঠু ও ন্যায়প্রবণ গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে আইনশৃঙ্খলা, মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন হবে। আজকের দিনে বিএনপি বিশ্বাস করে, স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি সুবিচারমূলক সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।

অবশেষে তিনি জাতির বিভিন্ন মৌলিক সমস্যা যেমন গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নারী ও শিশু নির্যাতন, দুর্নীতি, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসবাদ মোকাবেলায় দলটির কার্যক্রম আরও জোরদার করার ওপর জোর দেন। একজন নাগরিক হিসেবে সব সময় দেশের উন্নয়নের জন্য কাজ করতে তিনি সকলের প্রতি আহ্বান জানান।