ঢাকা | বুধবার | ২২শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৬ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৩০শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

সেপা চুক্তি হলে বাংলাদেশ-দক্ষিণ কোরিয়ার সম্পর্ক আরও দৃঢ় হবে

বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (সেপা) স্বাক্ষর হলে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের আরও উন্নতি ও গভীরতা আসবে বলে মনে করছেন ঢাকায় নিযুক্ত কোরিয়ার রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং সিক। রবিবার রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত এক সেমিনারে তিনি এ অভিমত প্রকাশ করেছেন। এই সেমিনারটি আয়োজন করে ঢাকার কোরিয়া প্রজাতন্ত্রের দূতাবাস, যার শিরোনাম ছিল ‘কোরিয়ান বিনিয়োগকারীদের জন্য সিএসআর কার্যক্রম এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা’। এসময় রাষ্ট্রদূত বলেন, একটি দ্বিপাক্ষিক সেপা স্বাক্ষর করলে কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্র আরও প্রসারিত হবে, বিশেষ করে তৈরি পোশাক শিল্পে। তিনি বলেন, বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি, কৌশলগত অবস্থান এবং শ্রমশক্তির কারণে দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগকারীরা ক্রমে আরও আগ্রহী হয়ে উঠছেন, যা এই সম্পর্কের উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। প্রবাসী কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত উল্লেখ করেন, বিনিয়োগের জন্য বাংলাদেশে ভিসা সুবিধা, সহজে নবায়ন, শুল্ক ছাড় ও কাঁচামাল বা মধ্যবর্তী পণ্যসম্ভারের ওপর কম শুল্ক আরোপের প্রয়োজন রয়েছে, যাতে ব্যবসার পরিবেশ আরও উন্নত হয়। তিনি আরও জানান, বাংলাদেশে কোরিয়ান পণ্য রপ্তানি ক্রমশ বাড়ছে, তবে এর পরিমাণ এখনও সন্তোষজনক নয়। পোশাক, আইটি পণ্য, চামড়াজাত পণ্য, হালকা শিল্পজাত দ্রব্য এবং ওষুধের ক্ষেত্রে আরও রপ্তানি বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের সমৃদ্ধ অর্থনীতি, সামাজিক উন্নয়ন ও দায়িত্বশীল বিনিয়োগে সিএসআরের গুরুত্ব দিন দিন বাড়ছে। কোরিয়ার প্রতিনিধিরা বাংলাদেশে বিভিন্ন সিএসআর কার্যক্রম উপস্থাপন করেণ, যার মধ্যে ছিল শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পরিবেশ ও দক্ষতা উন্নয়নের উদ্যোগ। উল্লেখ্য, সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন দেশের শীর্ষস্থানীয় কোরিয়ান সংস্থাগুলোর প্রতিনিধিরা, যেমন এলজি, স্যামসাং, উরি ব্যাংক, দোহওয়া ইঞ্জিনিয়ারিং ও ইয়ংওয়ান। তারা তাদের সামাজিক উন্নয়নের বিভিন্ন প্রকল্পের ধারণা দিলেন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন সেভ দ্য চিলড্রেন কোরিয়া, অক্সফাম কোরিয়া, হ্যাবিট্যাট কোরিয়া, গুড নেবারস, এডিআরএ কোরিয়া এবং গ্লোবাল কেয়ার-এর প্রতিনিধিরা, যারা বাংলাদেশে স্থায়ী সমাজসেবা ও জীবনমান উন্নয়নে কাজ করছে। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা দেন সিএসআর সেন্টারের চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রদূত ফারুক সোবহান, যিনি দায়িত্বশীল কর্পোরেট কার্যক্রমের মাধ্যমে আস্থা ও দীর্ঘমেয়াদি অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার গুরুত্ব তুলে ধরেন। শেষে কোরিয়া-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স ও ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি শাহাব উদ্দিন খান অবদান রাখেন। এই সব উন্নয়নশীল উদ্যোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া বৃহত্তর সহযোগিতা ও সম্পর্ক গড়ে তুলতে একযোগে এগিয়ে চলবে বলে আশা করা যাচ্ছে।