দেশে ক্যান্সার রোগের বৃদ্ধি ঠেকানোর জন্য আরও বেশি সংখ্যক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি করার উদ্যোগ নেওয়া দরকার বলে গুরুত্ব দিয়ে ভাষ্য দিয়েছেন স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নুরজাহান বেগম। তিনি বলেছেন, ক্যান্সার প্রতিরোধে শুধু সাধারণ সচেতনতা নয়, বিশিষ্ট চিকিৎসকদের আরও বেশি বাড়ানোর ওপর জোর দিতে হবে। গতকাল সোমবার রাজধানীর ন্যাশনাল বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্তন ক্যান্সার সচেতনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, আমাদের দেশের ক্যান্সার রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে, যা উদ্বেগজনক। তাই ক্যান্সারের পরিমাণ কমানোর জন্য খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও যথাযথ স্বাস্থ্য সচেতনতা আবশ্যক। এর পাশাপাশি, একান্ত প্রয়োজন হচ্ছে আরও বেশি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক তৈরি করে দেশের প্রত্যেক জেলার মানুষকে ক্যান্সার সংক্রান্ত সচেতনতা মূলক কার্যক্রমের আওতায় আনা।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার প্রতিটি বিভাগীয় হাসপাতালে ক্যান্সার, কিডনি ও ডায়ালাইসিসের আধুনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এ ছাড়া, ক্যান্সার চিকিৎসায় ব্যবহৃত লিনাগ মেশিন জোগাড়ের জন্য সরকার ৩৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। কিছু মাসের মধ্যেই এই অত্যাধুনিক মেশিনগুলো দেশে আসার আশ্বাস দেন তিনি।
বিশেষ করে স্তন ক্যান্সার চিকিৎসায় আধুনিক ও যুগোপযোগী ব্যবস্থা চালুর প্রতি তিনি গুরুত্ব দেন। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া সংশ্লিষ্টদের স্বার্থে তিনি ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, সরকারের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।
এছাড়াও, তিনি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে জটিলতাগুলোর জন্য আমলাতান্ত্রিক সমস্যা তুলে ধরেন। বললেন, অনেক গুরুত্বপূর্ণ ফাইল এক মাসের বেশি সময় ধরে একটি অফিসে পড়ে থাকছে—এর ফলে উন্নয়ন প্রক্রিয়া ধীর হয়ে যায়। তিনি সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরকে আরো বেশি আন্তরিক হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
নূরজাহান বেগম আরও বলেন, ভবিষ্যতে হয়তো জাতীয় নির্বাচনের পর আমরা সকলে থাকবো না, তবে গ্রামীণ ব্যাংক ও স্থানীয় এনজিওগুলো দেশের সাধারণ মানুষের পাশে থাকবে সব সময়। তারা সহজে দারিদ্র্য বিমোচনে কাজ করে যাবে।
তিনি উল্লেখ করেন, দেশের অর্থের স্বল্পতা থাকার কারণে বিদেশে গিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জনে কিছুটা অসুবিধা হলেও, বিদেশি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারকে আমদানির মাধ্যমে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা আরও শুষ্ক ও আধুনিক হতে পারে। এ জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলোকে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান তিনি।
অন্যদিকে, অনুষ্ঠানে উপস্থিত স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহা-পরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার মো. আবু জাফর বলেন, স্তন ক্যান্সার সময়মতো শনাক্ত করলে শতভাগ চিকিৎসা সম্ভব। তাই সবাইকে লজ্জা বা ভয় ছাড়াই স্বাস্থ্যের জন্য স্ক্যানিং করানোর পরামর্শ দেন। যদি ক্যান্সার দ্রুত ধরা পড়ে, তবে তার নিরাময় সম্ভাবনা অনেক বেশি।
