ঢাকা | বৃহস্পতিবার | ১৬ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩১শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৪শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

মিরপুরে পোশাক কারখানা ও রাসায়নিক গুদামে অগ্নিকাণ্ডে ১৬ মৃত্যুর শোকাবহ ঘটনা

রাজধানীর মিরপুর রূপনগরে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কমপক্ষে ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই ঘটনায় আরও হতাহতের শঙ্কা রয়েছে, কারণ এখনও অনেক মানুষ নিখোঁজ রয়েছেন। দগ্ধ ও হতাহতরা খুবই কয়েকজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে এবং বাকিদের খুঁজে পাওয়ার জন্য উদ্ধার কাজ অব্যাহত রয়েছে। ঘন ধোঁয়া και বিষাক্ত গ্যাসের কারণে ঘটনাস্থল ও আশপাশের হাসপাতালে আহত ও নিখোঁজ স্বজনেরা ছুটে যাচ্ছেন, সাহসের সঙ্গে প্রিয়জনের খোঁজে যুবরหว่าง। ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে সেখানকার চারতলা ভবনে। প্রথম দফায় উদ্ধারকাজ শুরু হয়, এরপর ধীরে ধীরে মৃতের সংখ্যা বেড়ে ১৬-এ পৌঁছায়। ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পোশাক কারখানা and রাসায়নিকের গুদামে বিস্ফোরণ ও অগ্নিকাণ্ডে ঘটে। বর্তমানে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং উদ্ধার কাজ চালাতে সেনা ও বিজিবি সদস্যরা কাজ করে যাচ্ছেন। তবে রাসায়নিকের গুদামে এখনো আগুন জ্বলছে এবং সেখানে ঢুকতে পারছে না উদ্ধারকারীরা। প্রচুর বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ থাকায় উদ্ধারকাজে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি তারা। জানা গেছে, গুদামে ব্লিচিং পাউডার, প্লাস্টিক এবং হাইড্রোজেন পার-অক্সাইড ছিল। আগুনের সূত্রপাত এখনো নিশ্চিত নয়, তবে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, প্রথমে ওয়াশ ইউনিটে আগুন লাগে, যা দ্রুত পাশের রাসায়নিক গুদামে ছড়িয়ে যায়। আরেকটি ভয়াবহ বিস্ফোরণের মাধ্যমে সেই গুদামেও আগুন ছড়িয়ে পড়ে। ফলে চারদিকে ভয়ংকর ধোঁয়া ও বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়ে। ধোঁয়া ও গ্যাসের কারণে অনেক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং বেশিরভাগ শ্রমিকই ধাক্কাধাক্কি করে বেরিয়ে আসার সময় আটকা পড়েছেন। এদিকে, নিহতদের দেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে, যেখানে ডিএনএ টেস্টের মাধ্যমে সনাক্তকরণ হবে। আগুনের প্রকৃতি ও সূত্রপাতের বিষয়ে বিস্তারিত অনুসন্ধান চলছে, তবে ধারণা করা হচ্ছে, রাসায়নিক গুদামে বিস্ফোরণ হওয়ায় আরও বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। আগুনে পোশাক ও রাসায়নিক গুদামের ভবন দুটির ছাদে দুটি তালা লাগানো থাকায় শ্রমিকরা উপরে ওঠার অনুমতি পাননি। এ ছাড়া, সকল অভিযোগে জানা গেছে, ভবনগুলোতে অগ্নিনিরাপত্তার কোন সনদ বা ফায়ার সেফটি পরিকল্পনা ছিল না। প্রাথমিক অনুসন্ধানে বের হয়ে এসেছে, অগ্নিকাণ্ডের তদন্তে দেখা যাচ্ছে, রাসায়নিকের গুদামটির অনুমোদনও নেই। এই অগ্নিকাণ্ডের বিষ্ঠা ও তদন্তে কর্তৃপক্ষ এখনো নিশ্চিত তথ্য জানাতে পারেনি। গভীর শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী, বিশিষ্ট ব্যক্তিরা ও রাজনৈতিক নেতারা—প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের শোকবার্তায় তিনি বলেন, এই অগ্নিকাণ্ডে নিহত ব্যক্তিদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি এবং আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক শোকবার্তায় নিহতদের আত্মার শান্তি and আহতদের দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন এবং বলেন, এই ধরনের দুর্ঘটনা যেন আর না ঘটে, তার জন্য নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি, সরকারকে অনুরোধ করেন দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে। এই ঘটনায় নিহত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা ও শোক প্রকাশ করেছেন দেশের বিভিন্ন দিক থেকে।