ঢাকা | বুধবার | ১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

এশিয়ার স্পট মার্কেটে বেড়েছে এলএনজির দাম

প্রায় এক মাসের স্থিতিশীলতা ভেঙে আবারও বেড়েছে এশিয়ার স্পট মার্কেটে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) এর দাম। ইউরোপের শীতের আগাম আগমন এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার গ্যাস অবকাঠামোতে হামলার কারণে এই জ্বালানি পণ্যের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। রয়টার্স ও মার্কেট স্ক্রিনার সূত্রে জানা গেছে, এই পরিস্থিতি পরিস্থিতির ফলে বিশ্ববাজারে এলএনজির দাম আবার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে।

উত্তর-পূর্ব এশিয়ায় নভেম্বরে সরবরাহের জন্য গত সপ্তাহে প্রতি এমএমবিটিইউ এলএনজির গড় মূল্য ছিল ১১ ডলার, যা আগের সপ্তাহে ছিল ১০ ডলার ৬০ সেন্ট। ডিসেম্বরের জন্য সরবরাহের গড় মূল্য দাঁড়িয়েছে ১১ ডলার ২০ সেন্ট।

এফজিইর গ্যাস ও এলএনজি সাপ্লাই অ্যানালিটিকসের পরিচালক সিয়ামাক আদিবি জানান, ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা হঠাৎ বৃদ্ধি পেয়েছে, কারণ অক্টোবরের শুরুতেই শীতের তীব্রতা ধরা পড়েছে। এই পরিস্থিতিতে বৈশ্বিক বাজারে এলএনজির দাম ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। তিনি আরও বলেছেন, ইউরোপে গ্যাস মজুতের গতি কমলেও রিগ্যাসিফিকেশন টার্মিনাল থেকে সরবরাহ যথেষ্ট থাকছে। তবে এশিয়ার বাজারে চাহিদা এখনো তুলনামূলক কম, এবং মধ্যপ্রাচ্য ও লাতিন আমেরিকার বাজারে মৌসুমী কারণেও চাহিদা হ্রাস পেয়েছে। ফলে এই শীত মৌসুমে এলএনজির মূল্য নির্ভর করবে প্রধানত ইউরোপের চাহিদার ওপর।

এসআন্ডপি গ্লোবাল কমোডিটি ইনসাইটস জানিয়েছে, উত্তর-পশ্চিম ইউরোপে নভেম্বরে সরবরাহের জন্য এলএনজির গড় মূল্য ছিল প্রতি এমএমবিটিইউ ১০ ডলার ৩৩ সেন্ট, যা নেদারল্যান্ডসের টিটিএফ ফিউচার চুক্তির তুলনায় ৬৩ সেন্ট কম। অন্যদিকে, আর্গাস এলএনজির মূল্য নির্ধারণ করেছে ১০ ডলার ৩৬ সেন্ট এবং স্পার্ক কমোডিটিসের মূল্য দাঁড়িয়েছে ১০ ডলার ৩০ সেন্ট প্রতি এমএমবিটিইউ।

এসআন্ডপি গ্লোবালের আটলান্টিক এলএনজির ব্যবস্থাপক এলি ব্লেকওয়ে বলেন, ইউক্রেনের ওপর রাশিয়ার সাম্প্রতিক হামলার ফলে প্রাকৃতিক গ্যাস উৎপাদনে প্রায় ৩০ শতাংশ কমে গেছে। এ ছাড়াও, অক্টোবর থেকে ইউরোপে শীতের শুরু হওয়ায় গ্যাসের মজুত উত্তোলন বেড়েছে, যা মূল্যের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে ইউরোপে প্রাকৃতিক গ্যাসের মজুত গত বছরের তুলনায় ১১ শতাংশ কম, ফলে শীত মৌসুমে ইউরোপকে বেশি মূল্যে এলএনজি আমদানি করতে হতে পারে।

তবে, আইসিআইএসের সিনিয়র এলএনজি বিশ্লেষক অ্যালেক্স ফ্রোলি মনে করেন, সেপ্টেম্বরে চীনের এলএনজি আমদানি কমে যাওয়া এবং মিসরের দুর্বল চাহিদা ইউরোপের বাজারে দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে।

অন্যদিকে, স্পার্ক কমোডিটিসের বিশ্লেষক ম্যাক্স গ্লেন-ডোয়েপেল জানিয়েছেন, বর্তমানে ইউরোপে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রপ্তানির প্রণোদনা বেশি, কারণ উত্তর-পূর্ব এশিয়ার তুলনায় ইউরোপীয় বাজারে মূল্য সুবিধা লাভ হচ্ছে। একই সাথে, এলএনজির পরিবহন খরচও কিছুটা কমেছে; গত শুক্রবার পর্যন্ত আটলান্টিক রুটে পরিবহন খরচ দৈনিক ২২ হাজার ডলার কমে গেছে, আর প্রশান্ত মহাসাগরীয় রুটে তা স্থির রয়েছে ২৪ হাজার ডলারে।