উত্তর আফ্রিকার উপকূল থেকে ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালি পৌঁছানোর চেষ্টা করছিলেন এক বাংলাদেশি। দুর্ভাগ্যবশত, যাত্রাপথে তার মৃত্যু ঘটে। তার নাম বা পরিচয় এখনও জানা যায়নি। ঘটনাটি ঘটেছে লাম্পেদুসা উপকূলে, যেখানে ইতালির কোস্ট গার্ড ও ফিন্যান্সিয়াল পুলিশের সাহায্যে তার মৃতদেহটি উদ্ধার করা হয়েছে। পাশাপাশি, একই নৌকায় থাকা আরও ৫১ জন অভিবাসীকে জীবনদায়ী উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক ধারণা অনুযায়ী, হয়তো অভিবাসী বহনকারী নৌকাটি হাইড্রোকার্বন বা জ্বালানির বিষাক্ত ধোঁয়ায় নিঃশ্বাস নিতে না পেরে তার মৃত্যু হয়েছে। মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য কালা পিসানার মর্গে পাঠানো হয়েছে, যেখানে রিপোর্ট আসলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে মিসরীয়, বাংলাদেশি, ইরিত্রীয়, ইথিওপীয়, সিরীয় ও সুদানীয় নাগরিকরা রয়েছেন। এদের মধ্যে দুই নারী এবং একজন অপ্রাপ্তবয়স্কও আছে।
অভিবাসীদের এই দলটিকে ইতালির দক্ষিণাঞ্চলীয় ইমব্রিয়াকোলা জেলার অভিবাসন কেন্দ্রেও নেওয়া হয়েছে।
ঘটনার দিন রাতে লাম্পেদুসার ফাভারোলো জেটি থেকে নামার পর, অভিবাসীরা জানিয়েছেন, উদ্ধারকর্মীরা আসার আগে তাদের এক সঙ্গী সমুদ্রে পড়ে যান এবং তাকে আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।
ইতালি সরকার ২০২৪ সালে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের কারণে দেশটিতে অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা কমে এসেছে। তবে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ২০২৫ সালে এই সংখ্যা কিছুটা বেড়ে গেছে।
২০২৪ সালের শুরু থেকে ৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত, ইতালিতে সমুদ্রপথে অনিয়মিত অভিবাসীর সংখ্যা ছিল ৪২ হাজার ৯৯৯ জন। আর এ বছরের একই সময়ে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ হাজার ৮৬০ জন। তবে, ২০২৩ সালে এই সময়ে অভিবাসীর সংখ্যা রেকর্ড ছিল এক লাখ ১৪ হাজার ৮৬৭ জন।
বিশেষ করে, এই বছর যারা ইতালি পৌঁছেছেন, তাদের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বাংলাদেশিরা। ১৩ হাজার ২৭১ জন বাংলাদেশি ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইতালিতে পৌঁছেছেন। এরপরই রয়েছে ইরিত্রিয়া, যেখানে ৫ হাজার ৮১১ জন নাগরিক ইতালিতে গেছেন। এছাড়াও রয়েছে মিসর, পাকিস্তান, সুদান, ইথিওপিয়া ও সোমালিয়ার নাম।