দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের জন্য ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ তফসিল ঘোষণা করা হবে। এই ঘোষণা একদিকে নির্বাচন কার্যক্রমের সব দিক চূড়ান্ত রূপ দিতে সাহায্য করবে, অন্যদিকে একটি বড় পরিবর্তন আনবে বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রমে। তফসিল ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে এমন অনেক কার্যক্রম এবং সিদ্ধান্ত বন্ধ করে দেওয়া হবে, যার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন অবাধ ও সুষ্ঠু পরিবেশ তৈরি নিশ্চিত করা যাবে। এর মধ্যে অন্যতম হলো—অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ এখন থেকে নতুন কোনও প্রকল্প অনুমোদন করতে পারবে না, যা এই সময়ের অপ্রয়োজনীয় কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে।
তফসিল ঘোষণার পরপরই নির্বাচন কার্যক্রমে বিশাল পরিবর্তন আসবে। গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, আজ তফসিল জারি হবার পর থেকে নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশের পরবর্তী ১৫ দিন পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের অনুমতি ছাড়া প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তাদের বদলি বা transferred করা যাবে না। এর মধ্যে রয়েছে বিভাগীয় কমিশনার, মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) ও তাদের অধীনস্থ কর্মকর্তারা। এছাড়া, সংবিধানের ১২৬ অনুচ্ছেদ ও আরপিওর ৫ অনুচ্ছেদ অনুসারে, তফসিল ঘোষণার পর থেকে নির্বাচনকে স্বচ্ছ ও স্বাধীনভাবে পরিচালনা করতে নির্বাচন কমিশনকে সহায়তা করার জন্য প্রশাসন বাধ্য থাকবেন।
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী আচরণবিধি কঠোরভাবে অনুসরণের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। তফসিল ঘোষণার মাত্র ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজনীতি দল ও প্রার্থীদের সব ধরনের প্রচারণামূলক পোস্টার, ব্যানার ও পোস্টার সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে। তা না করলে আচরণবিধি ভঙ্গের জন্য আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নির্বাচনী আচরণবিধি অমান্য করলে শাস্তির মুখে পড়তে হবে তাদের। এরই অংশ হিসেবে, প্রতিটি উপজেলা ও থানায় আগামীকাল থেকে দুজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। ভোটের পূর্ব, দিন ও পরে শেষ পাঁচ দিন এই ম্যাজিস্ট্রেটের সংখ্যা বাড়ানো হবে, যাতে ভোটের পরিবেশ সুস্থ ও শান্তিপূর্ণ থাকে।
গুরুত্বপূর্ণ খবর হলো, নির্বাচনী এলাকায় প্রভাব বিস্তার ও অপপ্রচার রোধে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী কার্যক্রম চালু থাকবে। এর আওতায় সব ধরনের অনুদান ও ত্রাণ বিতরণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। গত ৭ ডিসেম্বর নির্বাচন কমিশনের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, যেখানে নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. তারিক এসব জানিয়েছিলেন। এই সব সিদ্ধান্তের মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সময়ের নিরাপদ ও নিরপেক্ষ পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হবে বলে আশা করা হচ্ছে।














