বাংলাদেশের সামগ্রিক পারচেজিং ম্যানেজার্স’ ইনডেক্স (পিএমআই) নভেম্বর মাসে ৫৪.০ হিসাবে নির্ধারিত হয়েছে। এটি অক্টোবরের তুলনায় ৭.৮ পয়েন্ট কম, যদিও এখনো এটি অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের পর্যায়ে রয়ে গেছে। এই ফলাফল দেখাচ্ছে যে দেশের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে সম্প্রসারণের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলেও গতি কিছুটা ধীরভাবে চলছে।
মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই), ঢাকা এবং পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশ (পিইবি) যৌথভাবে নভেম্বর মাসের পিএমআই প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই উদ্যোগের মাধ্যমে দেশের অর্থনৈতিক স্বাস্থ্যের একটি দ্রুত ও নির্ভুল চিত্র তুলে ধরা হয়, যা ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী ও নীতিনির্ধারকদের তথ্যভিত্তিক সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করে। এটি এমসিসিআই ও পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগের ফল এবং এর জন্য যুক্তরাজ্য সরকারের সহায়তা ও সিঙ্গাপুর ইনস্টিটিউট অব পারচেজিং অ্যান্ড ম্যাটেরিয়ালস ম্যানেজমেন্টের (এসআইপিএমএম) কারিগরি সহযোগিতা প্রয়োজন হয়েছে।
নভেম্বরের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, কৃষি খাত টানা তৃতীয় মাসের মতো সম্প্রসারণে থাকলেও এই খাতে গতি কিছুটা কমেছে। নতুন ব্যবসা, কর্মসংস্থান ও ইনপুট ব্যয়ের সূচকগুলিতে ধীর গতির সম্প্রসারণ হলেও ব্যবসায়িক কার্যক্রমের সূচক দ্রুততর সম্প্রসারণ দেখে গেছে। অন্যদিকে, অর্ডার ব্যাকলগের ক্ষেত্রে ধীর সংকোচন লক্ষ্য করা গেছে।
উৎপাদন খাত টানা ১৫তম মাসের মতো সম্প্রসারণ অব্যাহত রেখেছে, তবে এর গতি কমে গেছে। নতুন অর্ডার, রপ্তানি অর্ডার, উৎপাদন, ইনপুট ক্রয়, সমাপ্ত পণ্য, আমদানি, ইনপুট মূল্য, কর্মসংস্থান ও সাপ্লাইয়ার ডেলিভারির সব সূচকই সম্প্রসারণে ছিল। তবে অর্ডার ব্যাকলগের সংকোচন আরও দ্রুততর হয়েছে।
নির্মাণ খাতও টানা তৃতীয় মাসের মতো সম্প্রসারণ ধরে রাখতে পারেনি, গতি কমে এসেছে। নির্মাণ কার্যক্রম, কর্মসংস্থান ও ইনপুট খরচের সূচকগুলোতে সম্প্রসারণ দেখা গেলেও অর্ডার ব্যাকলগে দ্রুত সংকোচন এবং নতুন ব্যবসার সূচক সংকোচনে ফিরে এসেছে।
সেবা খাত টানা ১৪তম মাসের মতো সম্প্রসারণে থাকলেও প্রবৃদ্ধি বেশ মন্থর হয়েছে। কর্মসংস্থান ও ইনপুট ব্যয়ের সূচকগুলোতে ভাল ফলাফল থাকলেও, নতুন ব্যবসা, ব্যবসায়িক কার্যক্রম ও অর্ডার ব্যাকলগে সংকোচন দেখা গিয়েছে।
ভবিষ্যৎ ব্যবসার ভাবনা সূচকে দেখা গেছে, কৃষি, নির্মাণ ও সেবা খাতে দ্রুততর সম্প্রসারণের প্রত্যাশা থাকলেও উৎপাদন খাতে গতি খুব ধীর।
পিএমআই প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সিইও ড. এম মাসরুর রিয়াজ বলেন, নভেম্বরে অর্থনৈতিক সম্প্রসারণের গতি দুর্বল হয়েছে। বৈশ্বিক চাহিদা হ্রাস, রপ্তানি প্রতিযোগিতার কমে যাওয়া, অভ্যন্তরীণ চাহিদার পতন ও জাতীয় নির্বাচনের আগে বিনিয়োগ স্থগিতের প্রবণতা দেশের অর্থনীতির উপর চাপ সৃষ্টি করেছে।
তবে, বার্ষিক রপ্তানি কমলেও মাসওয়ারি প্রবৃদ্ধি, কৃষি খাতে ধারাবাহিক ফসলের সংগ্রহ এবং অন্যান্য খাতে ভবিষ্যৎ ব্যবসার দ্রুততর সম্প্রসারণের প্রত্যাশা সমগ্র অর্থনীতিকে সমর্থন করছে। কেবল উৎপাদন খাতে দ্রুততর সম্প্রসারণের ব্যতিক্রমটি লক্ষণীয়।














