ঢাকা | মঙ্গলবার | ২১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৫ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৯শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

বাংলাদেশি পর্ন তারকা ও চক্রের মূল অভিযুক্ত গ্রেপ্তার

আন্তর্জাতিক পর্নোগ্রাফি নেটওয়ার্ক পরিচালনার অভিযোগে গ্রেপ্তার হন বাংলাদেশের দুজন দম্পতি, যাদের মধ্যে একজন চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বাসিন্দা আর অন্যজন মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার। তাদের পরিচিতি মূলত নিজেকে বাংলাদেশের এক নম্বর মডেল হিসেবে পরিচয় দেয়ার মধ্য দিয়ে হলেও, বাস্তবে তারা আন্তর্জাতিক পর্নো সাইটে সক্রিয় পর্ন তারকা হিসেবে কাজ করতেন।

সিআইডির ভাষ্য অনুযায়ী, এই দম্পতি দীর্ঘদিন ধরে বিদেশি ওয়েবসাইটে পর্নো কনটেন্ট তৈরি ও প্রচারে জড়িত ছিলেন। গত রোববার (১৯ অক্টোবর) বান্দরবানে যৌথ অভিযানে সিআইডির সাইবার পুলিশ Center ও এলআইসি শাখার সদস্যরা তাদের গ্রেপ্তার করে। সোমবার (২০ অক্টোবর) সকালে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান এই গ্রেপ্তার নিশ্চিত করেন।

সহবস্তুর হিসেবে, বৃষ্টির নাম বাংলাদেশের আড়ম্বরে ‘বাংলাদেশের এক নম্বর মডেল’ হিসেবে পরিচিত হলেও, আসলে তিনি এক আন্তর্জাতিক পর্ন তারকা। তার প্রথম ভিডিও ২০২৪ সালের মে মাসে প্রকাশিত হয় এবং এখন পর্যন্ত তার ১১২টি কনটেন্টের মাধ্যমে ২৬৭ মিলিয়ন-এর বেশি ভিউ অর্জিত হয়েছে। এই কনটেন্টগুলো সে বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে প্রচার করতেন, যেমন টেলিগ্রাম, টুইটার (এক্স), ও ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ। বিশেষ করে অক্টোবরের প্রথম দু সপ্তাহের মধ্যে তারা ৫০টির বেশি ফেসবুক পেজ থেকে ওই কনটেন্টের লিঙ্ক প্রচার করছিল।

অন্যদিকে, আজিম চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার বাসিন্দা, যিনি পূর্বে বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তার বিরুদ্ধে মাদক মামলাও থাকলেও তিনি দ্রুত জামিন নিয়ে ছাড়া পেয়েছেন। অন্যদিকে, বৃষ্টি মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার। পারিবারিক সূত্র জানায়, প্রথম স্বামীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর তিনি ঢাকায় এসে অনলাইন এডাল্ট কনটেন্টে জড়ান। তারা সমাজে অত্যন্ত বিলাসবহুল জীবনযাত্রা উপস্থাপন করতেন, যদিও বাস্তবে তারা অপরাধের জালে জড়িত।

তদন্তে দেখা গেছে, বৃষ্টির নামে একটি টেলিগ্রাম চ্যানেল রয়েছে, যা তারা যৌথভাবে পরিচালনা করতেন। ওই চ্যানেলে নিয়মিত পেইড ভিডিও বিক্রি করা হতো। তারা তাদের আয়ের স্ক্রিনশট প্রকাশ করে তরুণদের এই কাজের দিকে আকৃষ্ট করতেন। বৃষ্টির ফেসবুকে প্রায় ৪৯ হাজার এবং ইনস্টাগ্রামে ১২ হাজার অনুসারী রয়েছে।

বাংলাদেশের পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইন-২০১২ অনুসারে, এই ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ড দণ্ডনীয় অপরাধ। সিআইডি বলছে, এই দম্পতি শুধু নিজে এই কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন না, বরং দেশের একটি বড় নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছেন এবং অন্যদেরও এই চক্রে যুক্ত করছিলেন। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে আজ দুপুরে এক সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে বলে জানা গেছে।