স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জানিয়েছেন যে, রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে ২০১৩ সালে হেফাজতে ইসলামের শহীদদের জন্য একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করা হবে। এই স্মৃতিস্তম্ভ দেশের মানুষ তাদের সার্বভৌম স্মরণ করে প্রেরণা লাভ করবে। গতকাল শনিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে হেফাজত ইসলামের মহাসমাবেশ এবং মোদিবিরোধী আন্দোলনে শহীদদের পরিবারের জন্য অর্থ সহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
আসিফ মাহমুদ উল্লেখ করেন, ২০১৩ সালে হেফাজত ইসলামের আন্দোলনই ছিল বাংলাদেশের ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সূচনা। সেই সময় সরকার নিরীহ ও নিরপরাধ হেফাজত কর্মীদের হত্যা করে বোঝাতে চেয়েছিল যে, তারা দেশ থেকে ইসলামকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়। তাদের এই নির্যাতন-নিরুপাতের মাধ্যমে গণমানুষের আন্দোলন দমন করা সম্ভব হবে বলে মনে করেছিল। তবে এই ঘটনাগুলো প্রমাণ করে, জুলুম ও নির্যাতন কখনোই চিরস্থায়ী হয় না।
তিনি আরও বলেন, এই আন্দোলনের সূত্র ধরে ২০২৪ সালে ফ্যাসিবাদবিরোধী কঠোর আন্দোলন শুরু হয়েছে। ছাত্র-জনতার তীব্র প্রতিরোধে শেখ হাসিনা অঙ্গীকার নেন, দৌড়ে পালানোর জন্য।
আসিফ মাহমুদ বলেন, আমি তখন নবম শ্রেণিতে পড়ি। টেলিভিশনে দেখেছি লাখো যুবক-যুবতি কীভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল। কিন্তু সেসব সত্য ঘটনা জাতির কাছে প্রকাশ হয়নি। তিনি জানান, শাপলা চত্বরে হেফাজত ইসলামের শহীদদের জন্য একটি স্থায়ী স্মৃতিস্তম্ভ তৈরি করা হবে, যা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এক শক্তিশালী প্রেরণা হিসেবে কাজ করবে।
এছাড়া, এই অনুষ্ঠানে ২০১৩ সালের ৫ মে শাপলা চত্বরে হেফাজতের মহাসমাবেশে সংঘটিত হত্যাযজ্ঞে নিহত ৫৮ জন এবং ২০২১ সালে মোদিবিরোধী বিক্ষোভে নিহত ১৯ জনের পরিবারকে প্রত্যেকে ১০ লক্ষ টাকা অনুদানের চেক প্রদান করা হয়।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ. ফ. ম. খালিদ হোসেন, যিনি বলেন, ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরে হেফাজত কর্মীদের নৃশংসভাবে হত্যা করে তৎকালীন সরকার মনে করেছিল, এক সক্রিয় আন্দোলন দমন করা সম্ভব। তিনি হেফাজতের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যেন তারা শহীদ ও আহতদের তালিকা তৈরি করে। ধর্ম মন্ত্রণালয় এই কাজে সমর্থন দেবে বলে আশ্বাস দেন।
তিনি অভিযোগ করেন, সেদিন সাত হাজারের বেশি পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি সদস্যরা হেফাজত কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছিল, যার খরচ পৌঁছায় প্রায় দেড় লাখ টাকা। এরপরও ঐ ঘটনার সত্যতা ইতিহাসের পাতায় অজেয় থাকবে।
অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মাকসুদ জাহিদী। আরও উপস্থিত ছিলেন হেফাজত ইসলামের আমির মুহিবুল্লাহ বাবুনগরী, মহাসচিব মাওলানা মাজেদুর রহমান, জামায়াত ইসলামের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরোয়ার, খেলাফতে ইসলামের নেতা মাওলানা মামুনুল হক, গনধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নূর প্রমুখ।














