ঢাকা | বুধবার | ১৫ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ৩০শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে রবিউস সানি, ১৪৪৭ হিজরি

শতফুল ফুটতে দাও: গণতন্ত্র ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বার্তা

বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সম্প্রতি ঠাকুরগাঁওয়ে এক সভায় বলেছেন, ‘শতফুল ফুটতে দাও’। এই কথার মাধ্যমে তিনি দেশের সার্বভৌমত্ব ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছেন। বুধবার (১৫ অক্টোবর) জেলা সদর উপজেলার গড়েয়া ইউনিয়নের এক সমাবেশে তিনি বক্তব্য দেন, যেখানে ইউপি পরিষদ সদস্য, স্থানীয় শিক্ষক, মুসলিম ও হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরুষ, রাজনীতিবিদসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

মির্জা ফখরুল তাঁর বক্তৃতায় emphasizing করেছেন যে, দীর্ঘ সময় ধরে ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত জনগণ এখন তাদের ভোটাধিকার পুনরুদ্ধার করছে, যার জন্য বিএনপি ও তার নেতা-লরা সংগ্রাম করেছেন এবং প্রাণ দিয়েছেন। তিনি বলেন, এটা সবকিছুর মূল লক্ষ্য হলো একটি সত্যিকার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা। ভোটের মাধ্যমে জনগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে নির্বাচিত করবে, যারা সংসদে গেলে তাদের কথা বলবে এবং দেশের তথা জনগণের স্বার্থে কাজ করবে।

মহাসচিব আরও জানান, এ বার দেশের সংসদ ব্যবস্থা কিছুটা পরিবর্তিত হবে। এবার হবে দ্বৈত পার্লামেন্ট। একটি নিম্নকক্ষ ও একটি উচ্চকক্ষ। নির্বাচিত প্রতিনিধিরা নিম্নকক্ষের সদস্য হিসেবে জুড়িত হবেন, আর উচ্চকক্ষের সদস্যরা গৌণ প্রাধান্য পাবে তাদের প্রতিনিধিত্ব অনুযায়ী। এই পার্লামেন্টে বিভিন্ন সেক্টরের প্রতিনিধিরা থাকবেন— হিন্দু, মুসলিম, আলেম, পণ্ডিতসহ বিভিন্ন শ্রেণির ব্যক্তিরা। এতে কার্যকর গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া চালু হবে এবং দলের ওপর কর্তৃত্ব কমবে, যাতে সরকারের পক্ষপাতিত্বের অবসান ঘটে। এই পরিবর্তনের ফলে জাতির দীর্ঘদিনের অস্থিরতা ও স্বৈরশাসনের অবসান ঘটবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

ফখরুল বলেন, ৫ আগস্টের ছাত্র জনতার অভ্যুত্থান দৃঢ় করে বাংলাদেশের নতুন ধারা শুরু হয়েছে। নতুন করে দেশ গড়ার প্রক্রিয়ায় তিনি সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, বিভিন্ন মতামত থাকলেও গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত গ্রহণের উদ্দেশ্যে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় আস্থা রাখা আবশ্যক।

তিনি স্পষ্ট করে বলেছেন, বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষের জন্য সমঅধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হবে। হিন্দুদের মন্দির, মুসলিমদের মসজিদ ও অন্য প্রতিটি ধর্মের উপাসনাস্থল সুরক্ষিত থাকবে। মানুষ যেন নিজের ধর্ম, ইতিহাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে গর্ববোধ করতে পারে, সেটাই তার অঙ্গীকার।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শত ফুল ফুটতে দাও’— এই কথাটা সমাজে শান্তি ও সৌরভ ছড়ানোর বার্তা দেয়। তিনি অঙ্গিকার করেন, বিভাজন ও হিংসার রাজনীতি তারা প্রয়োজনে প্রত্যাখ্যান করবেন এবং এক গুচ্ছ শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবেন।

সর্বশেষে তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন, শহিদ জিয়াউর রহমান স্বাধীনতা ঘোষণা করে বাংলাদেশকে মুক্তির পথে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তাঁর ত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে দেশের সার্বভৌমত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২৪ আগস্টের ইতিহাসও তার কাছে অক্ষয় স্মৃতি, কারণ এই দিন যুবকদের রক্তের বিনিময়ে দেশের অশুভ শক্তি পরাজিত হয়েছিল। তিনি বলেন, এই সবকিছু একসঙ্গে নিয়ে গড়ে উঠবে নতুন বাংলাদেশ, যেখানে মানুষের আশা, স্বপ্ন ও আত্মবিশ্বাসের প্রতিফলন হবে।

এরপর, ফখরুল জনসমাগমের মধ্য দিয়ে সদর উপজেলার শুকানপুকুরী ইউনিয়নে এক মতবিনিময় সভাও করেন, যেখানে নির্বাচনের গুরুত্ব ও দেশের ভবিষ্যৎ স্থিতির কথা তুলে ধরে 오는 নির্বাচনে ধানের শীষের জন্য ভোট চান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা ও উপজেলা বিএনপির নেতৃবৃন্দরা।