ঢাকা | শুক্রবার | ১৪ই নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৯শে কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ২৩শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

নওগাঁর মোমনিপুর হাটে প্রতি মাসে আড়াই কোটি টাকার কাঁচা মরিচ বিক্রি

নওগাঁ জেলার মহাদেবপুরের মোমনিপুর বাজারে দেশের অন্যতম বড় কাঁচা মরিচের পাইকারি বাজার বসে। এই হাটে প্রতিদিন হাজারো ব্যবসায়ী ও কৃষক মরিচের ব্যবসা করেন। প্রতি মাসে এখান থেকে দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার কাঁচা মরিচ বিক্রি হয়, যা দেশের বিভিন্ন শহর ও জেলার মধ্যে সরবরাহ করা হয়। বিশেষ করে ঢাকা, রাজশাহী, সিলেট, চট্টগ্রাম ও দিনাজপুরসহ বেশ কয়েকটি বড় শহরে এই মরিচ পৌঁছে যায়।
সাধারণত বেড়াতে সময়, এই হাটে কাঁচা মরিচের দাম কিন্তু সম্প্রতি ব্যাপক পরিবর্তনের মুখোমুখি হয়েছে। দুই দিন আগে যেখানে কেজিপ্রতি মরিচের দাম ছিল ১৩০-১৫০ টাকা, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ৬০-৭০ টাকায়। এই দাম পরিবর্তনের জন্য কৃষকরা হতাশ, কারণ তার মতে এর ফলে তাদের লাভের মুখ দেখার সুযোগ কমে গেছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় কাঁচা মরিচের আমদানিতেও ভারতে থেকে মরিচ আসার কারণে হঠাৎ করে বাজারের অবস্থা পরিবর্তিত হয়েছে।
মোমنিপুরের এই হাটে বসে থাকেন কৃষক ও ব্যবসায়ীরা, যারা এই পরিবর্তন নিয়ে উদ্বিগ্ন। মহাদেবপুরের কুঞ্জবন এলাকা থেকে আসা কৃষক সোলেমান আলী ও গুলবর রহমান বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবারে মরিচের ফলন ভালো হয়েছে। কিন্তু দাম কমে যাওয়ায় তারা ক্ষতিগ্রস্ত। তারা জানায়, এই মরিচের খরচ অনেক হয়েছে, শ্রমিকের মজুরি, কীটনাশক ও অন্যান্য খরচ চালিয়ে এখন তারা নিজেরা ক্ষতিগ্রস্ত।
অন্যদিকে, বগুড়া থেকে আসা ব্যবসায়ী সুজন মিয়া বলেন, এই মরিচ দেশের বিভিন্ন শহরে সরবরাহ হয়। কিন্তু ভারতের মরিচ আমদানির কারণে বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি হয়েছে, ফলে দাম হঠাৎ কমে গেছে।
মোমনিপুর হাটের কমিটির সদস্য মামুনুর রশিদ বলেন, এই হাটটি জেলা পর্যায়ে সবচেয়ে বড় কাঁচা মরিচের বাজার। এ বছর হাটটি ৬ থেকে ৭ মাস চালু থাকছে এবং মাসে বিক্রি হয় দুই থেকে আড়াই কোটি টাকার মরিচ। তবে দাম কমে যাওয়ায় কৃষকরা এখন আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
জেলার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। যদিও দাম কমে যাওয়ার কারণে কৃষকরা আর্থিকভাবে লাভজনক অবস্থানে থাকছেন না। তিনি আশ্বাস দেন, কৃষকদের জন্য বিভিন্ন পরামর্শ ও সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়া হবে। এই বছর নওগাঁ জেলায় ৭৫০ হেক্টর জমিতে কাঁচা মরিচের চাষ হয়েছে।