ঢাকা | সোমবার | ৮ই সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২৪শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১৬ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

আজ বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

আজ ১ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। এ উপলক্ষে দলটি নানা ধরনের কর্মসূচি গ্রহণ করেছে, যার মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা ও বিভিন্ন উৎসবের আয়োজন। উল্লেখযোগ্যভাবে, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই দিনেই ১৯৭৮ সালে বিএনপি গঠন করেছিলেন। তিনি ছিলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।

১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের সময় জিয়াউর রহমান শহীদ হন। এর পরের বছরগুলোতে নানা রাজনৈতিক ঘটনার মধ্য দিয়ে ১৯৮৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি দলটির নেতৃত্ব গ্রহণ করেন তার স্ত্রী, বেগম খালেদা জিয়া। তিনি বর্তমানে বিএনপির চেয়ারপারসন। স্বৈরশাসক আওয়ামী লীগ সরকারের সময়, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি, খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করে মিথ্যা মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

বর্তমানে, দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছে তারেক রহমান, যিনি ২০০৭ সালের সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় থেকে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন। তিনি দলের কার্যক্রম দক্ষতার সাথে পরিচালনা করছেন সেখান থেকে।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সকালে নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়সহ দেশের বিভিন্ন দলীয় কার্যালয়ে পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনটি শুরু হবে। বিকালে, বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা আর সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফাতেহা পাঠ ও পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হবে। এই অনুষ্ঠানে দলের মহাসচিব, জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরা, বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা অংশ নেবেন। এছাড়া, সারাদেশে জেলা ও মহানগর স্তরে আলোচনা সভা ও বর্ণাঢ্য র‍্যালি অনুষ্ঠিত হবে।

গতকাল, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক শুভেচ্ছা বার্তায় বলেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণ এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি এখন প্রধান লক্ষ্য। তিনি এই দিনকে বাংলাদেশের মানুষের জন্য আনন্দ ও প্রেরণার দিন বলে বর্ণনা করেছেন।

তারেক রহমান বলেন, ‘১৯৭৮ সালে দেশনেতা জিয়াউর রহমান জাতীয়তাবাদী আদর্শের মাধ্যমে জনগণকে একত্রিত করেন। স্বাধীনতার পর একটি একদলীয় বাকশালী শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়, যা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে একটি কালো দাগ। সেই সময়ের আওয়ামী শাসনদল সহিংসতা, অরাজকতা ও রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে গণতন্ত্র হত্যা করে।’

তিনি উল্লেখ করেন, শহীদ জিয়াউর রহমান আবারও বহুদলীয় গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবন ঘটান এবং নাগরিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে তার নেতৃত্বে বিএনপি বিভিন্ন সময় নির্বাচন অংশগ্রহণ করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছে।

তারেক রহমান বলেন, ‘নানামুখী চক্রান্তের মধ্যেও বিএনপি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। স্বাধীনতাকে পুনরুজ্জীবিত করতে অনেক নেতাকর্মী জীবন উৎসর্গ করেছেন।’ তিনি উপাদান করেন, ১৯৮০’র দশকে,র এ সময় বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে আন্দোলনে দলের অসাম্প্রদায়িক ভূমিকার কথা স্মরণ করেন। ১৯৯১ সালে প্রথম নির্বাচিত সরকারের সময় দেশের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের পুনরুদ্ধার ও দৃঢ় করার কাজ করেছেন।

তিনি আরও জানান, বিএনপি গণতন্ত্র, উন্নয়ন এবং সমাজসেবা ক্ষেত্রেও গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি অর্জন করেছে। দেশের পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠী, নারীর ক্ষমতায়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, শিল্প, কৃষি, ব্যাঙ্ক ঋণ, বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও রেমিট্যান্সে যুগান্তকারী প্রगতি এসেছে। এই সব কাজের মাধ্যমে দেশীয় অর্থনীতি শক্ত ভিত্তিতে দাঁড়াতে শুরু করেছে।

তারেক রহমান আরও বলেন, ‘জনগণের আস্থার প্রতি সম্মান রেখে বিএনপি দেশের সেবা করে যাবে। যারা দলের জন্য জীবন দিয়েছেন, তাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা। সত্যিকার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হলে আইনের শাসন, স্বাধীন মত প্রকাশ, সংবাদ স্বাধীনতা, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত হবে। অন্যায়ভাবে গুম, গুপ্তহত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নারীর ও শিশুদের ওপর সহিংসতা, দুর্নীতি ও সন্ত্রাস দমন করতে বিএনপি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’