আজ ১ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) তার ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছে। এ উপলক্ষে দলের পক্ষ থেকে বিভিন্ন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে, যার মধ্যে আলোচনা সভা, শোভাযাত্রা ও অন্যান্য অনুষ্ঠান রয়েছে। বিএনপির গঠনকালের ইতিহাস খুবই গুরুত্বপূর্ণ; শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই দিন ১৯৭৮ সালে দলটির প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।
১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে ঘটে যাওয়া এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের সময় জিয়াউর রহমান শহীদ হন। এর পরের বছরগুলোতে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির চ্যালেঞ্জজনক পরিস্থিতি সত্যিই কঠিন হয়ে ওঠে। ১৯৮৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি বিএনপির নেতৃত্ব গ্রহণ করেন তার সহধর্মিনী বেগম খালেদা জিয়া, যিনি এখন দলের চেয়ারপারসন। স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষার্থে তার নেতৃত্বে বিএনপি লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে।
অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে, ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারিতে স্বৈরশাসক আওয়ামী লীগ সরকারের হাতে খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়, এবং তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন মিথ্যা মামলায় কারাদণ্ড দেওয়া হয়। চলমান পরিস্থিতিতে, তারেক রহমান বর্তমানে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি যুক্তরাজ্যে বসে দলের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছেন।
প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সকাল ৬টায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় নয়াপল্টনে দলের পতাকা উত্তোলন করা হবে। এর পর, সকাল ১১টায় দলটির প্রতিষ্ঠাতা, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে ফুল বিশর্গ করে ফাতেহা পাঠ এবং পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে শ্রদ্ধা জানানো হবে। এ দিনের অনুষ্ঠানে দলের মহাসচিব, স্থায়ী কমিটির সদস্য, অঙ্গ-সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ সকল পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা অংশ নেবেন। পাশাপাশি, দেশে-বিদেশে বিভিন্ন জেলা ও মহানগরে আলোচনা সভা, র্যালি ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে।
তারেক রহমান তাঁর এক বাণীতে বলেন, জনগণের অধিকার ফিরিয়ে আনাটা, দেশের স্বাধীকার ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য বিএনপি আজও সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন, ‘অতীতে একদলীয় শাসনব্যবস্থা চালু ছিল যা গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল। শহীদ জিয়াউর রহমান দেশের বহুদলীয় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যার মাধ্যমে দেশ আবার গণতান্ত্রিক পথে এগোতে শুরু করে। বিএনপি দীর্ঘ ৪৭ বছর ধরে বিভিন্ন নির্বাচনে অংশ নিয়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় ভূমিকা পালন করছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা জানি যে, কঠিন চক্রান্তের মধ্যেও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করে যাচ্ছে বিএনপি। দেশের গণতান্ত্রিক শক্তি ফেরানোর জন্য অনেক নেতাকর্মী জীবন বলিদান করেছেন। ৯০’র দশকে বিএনপি দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, এরপর ১৯৯১ সালে গণতান্ত্রিক সরকার গঠনের মাধ্যমে দেশের রাজনৈতিক ধারা পুনর্গঠিত হয়।
তারেক রহমান যোগ করেন, ‘বিএনপি দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্রের সমৃদ্ধিতে অবদান রেখে আসছে। দেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী, নারী, যুব-প্রজন্মের জন্য বিভিন্ন অগ্রগতি সাধন করেছে। দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে, শিক্ষার উন্নয়ন, স্বাস্থ্যখাত ও কৃষি, শিল্প ও বানিজ্য উন্নয়নে দলের অবদান অপরিসীম।’ তিনি জানান, দেশের মানুষের আস্থা জোরদার রাখতে এবং সরকারের বিভিন্ন অপকর্ম, গুম, গুপ্তহত্যা, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নারী ও শিশু নির্যাতনসহ নানা সমস্যা রোধে বিএনপি নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করে যাচ্ছে।