ঢাকা | বৃহস্পতিবার | ৪ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১২ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

১৯৮৮ সালের পর সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় পাঞ্জাব ভেঙে পড়েছে, মৃত ৩০

ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশ ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছে, যা ১৯৮৮ সালের পর এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক দুর্যোগ। এখনও পর্যন্ত কমপক্ষে ৩০ জনের মৃত্যু হয়েছে, এবং ২৩টি জেলায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। স্থানীয় সংবাদ সংস্থা এনডিটিভির খবর অনুযায়ী, হিমাচল প্রদেশ ও জম্মু ও কাশ্মীরের ভারী বর্ষণে উত্তর ভারতের বিভিন্ন নদীর পানি প্রবলভাবে বৃদ্ধির ফলে এর প্রভাব পড়ছে পাঞ্জাবেও। পরিস্থিতি এতটাই মারাত্মক যে সেনা, নৌবাহিনী ও বিমান বাহিনী উদ্ধার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

সরকারি তথ্যে জানা গেছে, এই বন্যার কারণে প্রায় ১ হাজার ৪০০ গ্রাম পানির নিচে তলিয়ে গেছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাঠানকোট জেলা, যেখানে মারা গেছে ছয়জন, ও বাড়ি হারিয়েছে আরও তিনজন। লুধিয়ানায় মারা গেছে চারজন।

প্রায় ৩২৪টি গ্রাম ডুবে গেছে গুরুদাসপুর জেলায়, যা ক্ষতির সবচেয়ে বড় স্থান বলে মনে করা হচ্ছে। তার পরে অমৃতসরেও ১৩৫টি গ্রাম ও হোশিয়ারপুরে ১১৯টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়াও, বার্নালা, বাথিন্ডা, ফিরোজপুর, পাতিয়ালা, এসএএস নগর, সাঙ্গরুর, তরন-তারান এবং ফাজিলকাসহ অন্যান্য জেলাগুলিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

বন্যার ফলে প্রায় ১ লাখ ৪৮ হাজার হেক্টর জমির ফসল ও পতিত অঞ্চল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, এবং ৩.৭৫ লাখ হেক্টর কৃষি জমি পানির নিচে চলে গেছে। এতে গবাদিপশুও ভেসে যাওয়ায় দুধ ও পশুপালন ক্ষেত্রেও গুরুতর সমস্যা দেখা দিয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য কেন্দ্রের কাছে ৬০ হাজার কোটি টাকা সাহায্য চেয়ে চিঠি লেখা হয়েছে।

এদিকে, পাঞ্জাবের এই ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখে আজ কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শিবরাজ সিংহ চৌহান অমৃতসরে রওনা দিচ্ছেন। তিনি বন্যাকবলিত এলাকা পরিদর্শন করবেন ও কৃষকসহ সাধারণ মানুষের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। ফিরতি পথে গুরুত্বপূর্ণ এক বৈঠকেও অংশ নেবেন, যেখানে ক্ষতিগ্রস্তরা সাহায়্য ও পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হবে।

অন্যদিকে, উত্তর ভারতের বেশ কয়েকটি রাজ্যে বন্যার কারণে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে বাঁধুনি বার্তা দিয়েছেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। তাঁর এক্স (টুইটার) পোস্টে প্রকাশ, ‘পাঞ্জাব ও অন্যান্য রাজ্য ভয়াবহ বন্যার সম্মুখীন। জম্মু, কাশ্মীর, হিমাচল ও উত্তরাখণ্ডের পরিস্থিতি গুরুতর। এই সময়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও প্রধানমন্ত্রীকে দ্রুত ও যথাযথ কার্যক্রম নেওয়ার অনুরোধ করছি। হাজার হাজার পরিবার তাদের জীবন, ঘরবাড়ি ও প্রিয়জনকে রক্ষা করতে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। আমি আহ্বান জানাচ্ছি, এই রাজ্যগুলোর জন্য অবিলম্বে বিশেষ সাহায্য ও উদ্ধার কার্যক্রম জোরদার করুক সরকার।’