ঢাকা | বৃহস্পতিবার | ৪ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১২ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

আসছে বিএনপির ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

আজ ১ সেপ্টেম্বর, বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিশিষ্ট একটি দিন। এই দিনে বিএনপি নিজেদের ৪৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন করছে। উপলক্ষে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও সংগঠন নানা অনুষ্ঠান, আলোচনা সভা, র‍্যালি এবং শোভাযাত্রার আয়োজন করেছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান এই দিনে ১৯৭৮ সালে বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা দেশের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। তিনি ছিলেন দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান।

১৯৮১ সালের ৩০ মে চট্টগ্রামে একটি ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানে শহীদ হন জিয়াউর রহমান। এরপর নানা অসুবিধা ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে ১৯৮৩ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি তিনি দলের নেতৃত্ব পুনরুদ্ধার করেন তার সহধর্মিণী বেগম খালেদা জিয়ার মাধ্যমে। তিনি দলের চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

অর্থাৎ, বর্তমান সময়ে দলের কার্যক্রমের মূল নেতৃত্ব বেশিরভাগ সময় নিজের কন্ট্রোলে রেখে চলেছেন তারেক রহমান, যিনি ২০০৭ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে যুক্তরাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস করার পর দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নিচ্ছেন। তিনি দক্ষতার সঙ্গে দল পরিচালনা করে চলেছেন।

প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই বিশেষ দিনটি উপলক্ষে আজ সকাল ছয়টায় নয়াপল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় এবং দেশের বিভিন্ন জনপদে দলের ক্যালেন্ডার অনুসারে পতাকা উত্তোলন করা হবে। মধ্য সকাল ১১টায় দলের প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের কবরে মালা অর্পণ, ফাতেহা পাঠ ও শ্রদ্ধা জানানো হবে। এই অনুষ্ঠানে অংশ নেবেন দলের মহাসচিব, দলের স্থায়ী কমিটির সদস্যগণ, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা। এছাড়াও, দেশের জেলা ও মহানগরে আলোচনা সভা, মহরত ও র‍্যালির আয়োজন থাকবে।

গতকাল বিএনপির ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক সংকল্পবদ্ধ বার্তায় বলেছেন, জনগণের অধিকার আদায়, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষা এবং বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে বিএনপি কাজ করে যাচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, ১৯৭৮ সালে জিয়াউর রহমান এই দল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা বাংলার মানুষের জন্য এক নতুন আশার সঞ্চার করেছিল।

তিনি আরও বলেন, স্বাধীনতার পর একদলীয় বাকশালী শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করে গণতন্ত্র কেড়ে নেওয়া হয়, অসংখ্য মানুষ হতাহত হয়েছিল, দেশ ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। সেই সময়ের আওয়ামী শাসন ব্যবস্থা সহিংসতা, বিশৃঙ্খলা, রাজনৈতিক হত্যা ও দমন-পীড়নের মধ্য দিয়ে অন্ধকারে ডুবে যায়।

জিয়াউর রহমান আবারও বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনেন, নাগরিক স্বাধীনতা সুদৃঢ় করেন, এবং নেতৃত্বে বিএনপি নানা সময়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তারেক রহমান বলেন, দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় বিএনপি সবসময়ই কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছে, অসংখ্য নেতা-কর্মী নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন।

বিএনপির এই উৎসবমুখর দিনে দল মনে করে, গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠা ও সংহতি নিশ্চিত করতে তার কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। দেশের সুশাসন, আইনের শাসন, স্বাধীন মতপ্রকাশ ও বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠা করতেই বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ। তারা নারীশিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, কৃষি ও সামাজিক নানা ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি এনেছে, যার ফলে দেশের অর্থনৈতিক ভিত্তি শক্তিশালী হয়ে উঠছে।

আসন্ন দিনে, দলের নেতা-কর্মীরা দেশের উন্নয়ন ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ রক্ষায় আরও সক্রিয় থাকবেন বলে প্রত্যাশা। দেশের গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, নারী ও শিশুর বিরুদ্ধে সহিংসতা, দুর্নীতি ও সন্ত্রাস দমনে সরকারকে আরও কঠোর পদক্ষেপ নিতে আহ্বান জানিয়ে এই দিনটি স্মরণীয় হয়ে থাকবে।