ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে দ্রুতগামী পরিবহন দিন দিন মানুষের জীবন নিচ্ছে। এই সড়কে প্রতিনিয়তই ঘটছে প্রাণহানির ঘটনা, আর পরিবারগুলো হারাচ্ছে একের পর এক প্রিয়জন। এসব ঘটনায় সাধারণ মানুষ আক্ষেপের সাথে বলছেন, ‘কেউবা হারাচ্ছেন জীবনসঙ্গী, বেঁচে থাকার স্বপ্ন আর আশা-ভরসা।’ প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে নিয়মিত হাইওয়ে ট্রাফিকের কারণে চোখের সামনে অনেকের প্রিয়জন হারানোর ঘটনা ঘটছে। অনেকেরই এখন শুধুই অপেক্ষা, কখন বাঁধা আসবে সরকার বা প্রশাসনের নজরে। এই সড়কে প্রাণ হারানোদের সংখ্যাও দিন দিন বেড়ে যাচ্ছে। একদিনে কেবলমাত্র কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ঘটে গেছে দু’টি মর্মান্তিক মৃত্যু।
নরসিংদীর রূপগঞ্জে বৃহস্পতিবার ভোরে ট্রাকের চাপায় শেখ ফরিদ (২০) নামে এক যুবক প্রাণ হারিয়েছেন। তিনি নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ থানার পালগাও এলাকার সুরুজ মিয়ার ছেলে। স্থানীয় প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, আউখाब এলাকায় রাস্তা পার করার সময় গতি সম্পন্ন ট্রাকের চাপায় গুরুতর আহত হন ফরিদ। আশপাশের লোকজন তাকে স্থানীয় ইউএস-বাংলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত্যু ঘোষণা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাস্থলে ট্রাকটি জব্দ করা হয়েছে, তবে ট্রাকচালক ও ড্রাইভার এখনও শনাক্ত হয়নি। এ ব্যাপারে আইনি ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে।
অপরদিকে, একই মহাসড়কের আউখাব এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় খাদে পড়ে আহত হন কবির উদ্দিন (৫৫)। তিনি সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার ফতেহপুর এলাকার মৃত তোয়ার মোল্লার ছেলে এবং রবিন টেক্সটাইলের ওভার প্রিন্ট বিভাগে কর্মরত ছিলেন। ভোরে ডিউটি শেষে বাড়ি যাওয়ার পথে অজ্ঞাতনামা ট্রাকের ধাক্কায় গুরুতর আহত হন এবং পরে স্থানীয়রা তাকে দ্রুত ইউএস বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। হাইওয়ে পুলিশ নিশ্চিত করছে, এ ঘটনাতেও আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের প্রক্রিয়া চলছে।
রূপগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে ও হাইওয়ে সড়কে হাইওয়ে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে, তবে এই সমস্যা আমাদের একার নয়। আমরা চেষ্টা করছি কীভাবে মানুষের জীবন রক্ষা করা যায়, তবে আমাদের কাছে লোকের অভাব আছে।’ এই পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ মনে করছেন, দ্রুত প্রশাসনের নজরদারি আর কার্যকর ব্যবস্থা নিলে মৃত্যুর সংখ্যা কমতে পারে।