ঢাকা | বৃহস্পতিবার | ৪ঠা সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২০শে ভাদ্র, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ১২ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি

পরিবেশ উপদেষ্টার বিশ্বব্যাপী সামুদ্রিক সম্পদ রক্ষার আহ্বান

সামুদ্রিক সম্পদের স্থায়ী রক্ষা এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য চিরস্থায়ী সম্পদ সংরক্ষণের জন্য পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আজ এক গুরুত্বপূর্ণ আহ্বান জানান। তিনি এটি বলেছেন জাপানের টোকিওতে অনুষ্ঠিত সাসাকাওয়া পিস ফাউন্ডেশন ভবনের আন্তর্জাতিক সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় ঢাকার বাসভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যোগ দিয়ে তার বক্তব্য প্রদানকালে। এই সভার শীর্ষক ছিল ‘ড্রাইভিং ওশেন লিডারশিপ অ্যান্ড ইনোভেশন: অ্যাডভান্সিং গভার্নেন্স, ব্লু ইকোনমি, অ্যান্ড মেরিন সায়েন্স টু অ্যাচিভ থার্টি বাই থার্টি।’ এতে বাংলাদেশের সামুদ্রিক সম্পদ ও পরিবেশের উপর গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেন তিনি।

রিজওয়ানা হাসান জানান, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্লাস্টিক দূষণের কারণে বাংলাদেশ নবম স্থান অধিকার করছে, যেখানে বেশির ভাগ দূষণের উৎস পাশের দেশগুলো থেকে আসে। এ জন্য তিনি বৈশ্বিক প্লাস্টিক সংকট মোকাবিলার জন্য আন্তর্জাতিক চুক্তিতে আরও বিশেষ বিধান অন্তর্ভুক্ত করার আহ্বান জানান। এছাড়াও, জাহাজভাঙা শিল্প বাংলাদেশের উপকূলের জন্য মারাত্মক হুমকি তৈরি করছে বলে তিনি সতর্ক করেন এবং হংকং কনভেনশনের অপর্যাপ্ততা নিয়ে সমালোচনা করেন।

উপদেষ্টা emphasizes করেন, সাগর এবং মহাসাগর রক্ষায় বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব ও বহুমুখী সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করতে হবে। টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট-১৪ (এসডিজি) অর্জনের জন্য সম্মিলিত প্রচেষ্টাই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য সামুদ্রিক সম্পদ সংরক্ষণের মূল চাবিকাঠি। তিনি উল্লেখ করেন, বঙ্গোপসাগর বাংলাদেশের অর্থনীতি, আঞ্চলিক যোগাযোগ ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভ’মিকা রাখছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ ‘অ্যাসেসমেন্ট অব কস্টাল অ্যান্ড মেরিন বায়োডাইভার্সিটি রিসোর্সেস অ্যান্ড ইকোসিস্টেম’ প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে, যার মাধ্যমে জাতীয় ডাটাবেজ, সংরক্ষণ পরিকল্পনা ও পর্যবেক্ষণ প্রটোকল প্রস্তুত হয়েছে। গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে সমুদ্রপৃষ্ঠের বৃদ্ধি এবং এর প্রভাব।

সৈয়দা রিজওয়ানা বাংলাদেশি সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ও সম্পদের অসাধারণ বৈচিত্র্যের উপর আলোকপাত করে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা জোরদারের আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের সমুদ্রজাত মাছের বিপুল সম্ভাবনা যথাযথভাবে মূল্যায়িত হয়নি, নানা দেশের অংশীদাররা এই খাতে বিনিয়োগ করতে পারেন যাতে দেশের অর্থনৈতিক উন্নতিতে সহায়তা হয়।

অতঃপর, তিনি সতর্ক করে বলেন, যদি বৈশ্বিক উষ্ণায়ন রোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ না করা হয়, তবে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রের অনেক এলাকা পানিতে ডুবে যাবে। এতে লক্ষ লক্ষ মানুষ বাস্তুচ্যুত হতে পারেন। এই সমস্যা সমাধানে বৈশ্বিক সহায়তা ও সমন্বয় এখনই জরুরি।

প্রসঙ্গত, অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সাসাকাওয়া পিস ফাউন্ডেশনের প্রেসিডেন্ট আতসুশি সুনামি, জাপানের নরওয়ে দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত ক্রিস্টিন ইগ্লুম ও ইউনেস্কো-আইওসির চেয়ার অধ্যাপক ইউতাকা মিচিদা প্রমুখ।