বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) মাঠে গড়ানোর আগেই বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়েছে চট্টগ্রাম রয়্যালস। এই ফ্র্যাঞ্চাইজির কোচিং স্টাফ, সাপোর্ট স্টাফ নিয়োগ এবং মালিকানার পেছনের ব্যক্তিদের নিয়ে তৈরি হয়েছে গভীর সন্দেহের মেঘ। দলের মেন্টর ও ম্যানেজার হাবিবুল বাশারের আকস্মিক অবসর নেওয়া এই বিতর্ককে আরও তীব্র করে তুলেছে, যা নিয়ে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) কর্মকর্তাদের মধ্যেও গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
বিসিবির সূত্র জানিয়েছে, চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজির কার্যক্রম ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের স্বচ্ছতা নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। বিশেষ করে, ব্রাদার্স ইউনিয়নের কর্মকর্তাদের সম্পৃক্ততা নিয়ে জোরালো সন্দেহ দেখা দিয়েছে। এর আগে দুর্বার রাজশাহীর সঙ্গে সংযুক্ত থাকার কারণে বিসিবির দুর্নীতি দমন বিভাগের ‘লাল তালিকায়’ আমিন খান ওরফে আমিনুল খানের নাম উঠেছিল। একেকজন বিসিবির পরিচালক বলছেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী আমিন খান সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন এবং অবলোচনায় দেখা গেছে, তিনি চট্টগ্রাম দলের সঙ্গে পরোক্ষভাবে যুক্ত।
চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজির কোচিং স্টাফ, কর্মকর্তাদের তালিকা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) দুর্নীতি দমন বিভাগে পাঠানো হয়েছে। তাদের পেছনের ইতিহাস খতিয়ে দেখার পরই পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
বিশেষ করে দলটির কোচ নিয়োগের প্রক্রিয়া নিয়েও সন্দেহের আঁচ লক্ষণীয়। যেখানে অন্য দলগুলো জাতীয় পর্যায়ের কোচ নিয়োগ করছে, সেখানে চট্টগ্রাম রয়্যালস নিয়োগ দিয়েছে বিভাগীয় কোচ মমিনুল হককে। মমিনুল হক পূর্বে ব্রাদার্স ইউনিয়নের কোচ ছিলেন, যা আমিন খানের সঙ্গে সংযোগের জল্পনাকে আরও জোরালো করে তুলেছে।
তবে আমিন খান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, তার বা তার পরিবারের কোনও সম্পর্ক চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে নেই। তিনি মনে করেন, মমিনুল হক থাকায় হয়তো কেউ কেউ তাঁকে জড়াচ্ছেন। তবুও হাবিবুল বাশারের মতো ব্যক্তিত্বের অবসর এবং কোচ নিয়োগের ব্যাপারে ক্র্যিকেটপ্রেমী ও অনুরাগীদের মধ্যে জল্পনা অব্যাহত রয়েছে।
বিপিএলে পাঁচ বছরের জন্য এই ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়া হলেও, শুরু থেকেই তাদের সক্ষমতা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল। ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি এবং ব্যাংক জামানত নিয়ে দুর্বলতা থাকায় প্রথমে বিসিবি এই দলটি চালানোর পরিকল্পনা করেছিল। তবে, সব দুর্বলতার মধ্যেও চট্টগ্রামকে ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে রাখা নিয়ে এখন অনেকের আর সন্দেহ থাকছে না। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে এই দলের স্বচ্ছতা নিয়ে সংকটের উদ্ঘাটন হয়েছে, যা আগামী পাঁচ বছরে বিপিএলে টিকে থাকার জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য বিসিবি কঠোর নজরদারি চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।














